আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মামলা করতে পারে।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল আসাদ রাসেলের মারধরের শিকার হয়েছেন দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম। আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভূক্তভোগী সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রফিকুল ইসলাম সংবাদ সংগ্রহের জন্য সেখানে যান। সংবাদ সম্মেলন শেষে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে বসেন ওবায়দুল কাদের।
বৈঠক শেষে মন্ত্রীরা বের হওয়ার সময় এক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম। এসময় ঐ সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা করে বসেন রাসেল এবং তার সঙ্গে থাকা ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা। তারা উপযুপরি কিল-ঘুষি দিতে থাকে। এসময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা এগিয়ে আসার পরে রাসেল তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে সড়ে পড়ে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, মাহমুদুল আসাদ রাসেল সবার কাছে মাস্তান রাসেল হিসাবে পরিচিত। রাজবাড়ী জেলার নেতা হলেও বসবাস করেন ঢাকায়। সার্বক্ষণিক অবস্থান করে আওয়ামী লীগ অফিসে। দলের এক সিনিয়র নেতাকে দেন বিশেষ প্রটোকল। ওই নেতার ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছেন ‘বিশেষ প্রটোকল’ বাহিনী। এই বাহিনীর মাধ্যমে চলে মাস্তানী। যারা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন তারা রাসেলকে ডাকেন 'কাইল্লা রাসেল' বা ‘কুনই রাসেল' নামে। তার বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্য, দলীয় নেতাকর্মীদের কুনই মারা এবং পেশাদার সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ধানমন্ডির কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মী এমনকি অনেক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও অতীতে বহুবার দুর্ব্যবহার করেছে রাসেল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কর্মরতরাও তার ওপর নানা কারণে ক্ষুব্ধ। সর্বশেষ সোমবার রাসেলের হামলার শিকার হলেন দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক রফিকুল ইসলাম।
দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিককে মারধরের প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরমার্শ দেন। পরবর্তীতে বিপ্লব বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ভুক্তভোগী সাংবাদিক মামলা করতে পারে। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত রাসেল বলেন, সাংবাদিক রফিকুলের সাথে যা হয়েছিল তা সমাধান হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিকুল বলেন, অফিসের সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে আইনি পদক্ষেপ নেবো।
ই-মেইলঃ anmsiddique326@gmail.com