পাহাড় খেকোদের তান্ডবে হুমকীর মুখে মনিরঝিল কমিউনিটি ক্লিনিক।


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ৫:১২ অপরাহ্ন / ৮১
পাহাড় খেকোদের তান্ডবে হুমকীর মুখে মনিরঝিল কমিউনিটি ক্লিনিক।
ফয়সাল আলম সাগর,
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:
রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন ২ নং ওয়ার্ড মনিরঝিলের বাসিন্দা আওয়ামী যুবলীগ নেতা আবুল ফয়েজ, পিতা-মোহাম্মদ হোছাইন এর নেতৃত্বে আব্দুর রহমান, পিতা-আবুল কাশেম, জিয়া উদ্দিন মামুন, পিতা-ফরিদুল আলম, মোহাম্মদ হারুন, পিতা-ফুরুখ আহমদ সিন্ডিকেট/চক্রটি সাবেক সাংসদ হুইপ কমলের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিত। যুবলীগ নেতা আবুল ফয়েজ এবং আব্দুর রহমান গং গত অবৈধ আওয়ামীলিগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে তাদের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট তৈরীর মাধমে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা থেকে শুরু করে বন বিভাগের লক্ষ লক্ষ গাছ কেটে সাবাড় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্রটি। এই চক্রের সাবাড় করা পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে সরকারি অনুদানের টাকায় স্থাপন করা হয়েছে সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক। পাহাড় কাটার বিষয়ে এলাকাবাসীর সমালোচনার মুখে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের নজরদারীর ভয়ে পাশে দিনে দিনে তৈরী করে একটি অস্থায়ী মসজিদ। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর অভিযোগ করে বলেন-প্রতিনিয়ত এই ভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক যে কোন সময় পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনার আশংকা প্রকাশ করেন। স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করে বলেন-আবুল ফয়েজ এবং আব্দুর রহমান সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাবেক সাংসদ হুইপ কমলের অস্বাভাবিক দাপট দেখিয়ে পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত হয়ে (অবহেলিত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল শান্ত এলাকা) এই মনিরঝিলের সাধারণ মানুষদের মনে ভীতি তৈরী করে যা ইচ্ছা তাই করে গিয়েছেন। গত ১৫/১৬ বছর এলাকাবাসী এই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি এমনকি কিছু বলতে গেলেই মামলা হামলার হুমকী-ধামকী দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন এই চক্রটি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী পাহাড় কাটা এবং বন বিভাগের গাছ কাটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবং বাঁকখালী বনবিভাগে কর্মরত অনেকেই এই বিষয়ে অবগত থেকেও কোন এক অদৃশ্য কারনে চুপ রয়েছেন বলে জানান। এই বিষয়ে বাঁকখালী বনবিভাগের অফিসার কুদ্দুস মিয়ার কাছে জানতে চাইলে পাহাড় কাটা এবং বন বিভাগের গাছ কাটার বিষয়টি তিনি অবগত নন এবং এই ধরনের কেউ কোন অভিযোগও করেননি বলে জানান। বন বিভাগের কর্মকর্তা কুদ্দুস মিয়া পাহাড় কাটার বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত হলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস প্রদান করেন। পাহাড় কাটার বিষয়টি রামু উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান- এই ধরনের পাহাড় খেকো চক্রের কারনে বাংলাদেশের পরিবেশগত ভারসাম্য আজ হুমকীর মুখে। তাছাড়া বিগত অবৈধ আওয়ামীলিগ সরকারের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন এই অপকর্ম করে ক্ষ্যন্ত হয়নি বর্তমান সময়ে জেলা উপজেলা বিএনপি তথা অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের আশ্রয়-পশ্রয়ে এবং নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে এই ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় এইসব সুযোগ সন্ধানী চক্রের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করেন। পাহাড় কাটার বিষয়ে অভিযুক্ত গ্যাং লিডার আবুল ফয়েজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাহাড় তাদের কিন্তু মাটি বিক্রি তিনি করেননি বরং শহিদুল্লাহ কোম্পানী করেছেন বলে তা এড়িয়ে যান। অভিযুক্ত আবুল ফয়েজ এর বক্তব্যের বরাত দিয়ে শহিদুল্লাহ কোম্পানীর সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়ের জমির মালিক আবুল ফয়েজই পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করেছেন এবং শহিদুল্লাহ আরো বলেন, পাহাড়ের মালিক কে বা কারা মাটি বিক্রি করেছেন এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে সঠিক তথ্য পাবেন, তাছাড়া অন্যজনের মাটি আমি বিক্রি করার প্রশ্নই উঠেনা তাছাড়া এগুলোতে আমার কোন সম্প্রিক্ততা নাই বলে উত্তর দেন। প্রত্যক্ষদর্শী এই অসাধু চক্র পাহাড় কাটা, বন বিভাগের গাছ কাটাসহ অসংখ্য অনিয়মে জড়িত রয়েছেন বলে দাবী করেন। পাহাড় কাটাসহ এলাকায় জনমনে ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রহমানসহ অন্যান্যদের বক্তব্য নিতে অসংখ্য বার মোবাইল ফোনে কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি ।