কক্সবাজারের চকরিয়ায় অটো ব্রিকস তৈরীর মিক্সার মেশিনে পিষ্ট হয়ে দুই শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু
প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪, ৫:১৮ অপরাহ্ন /
১৬
ফয়সাল আলম সাগর,
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় অটো ব্রিকস তৈরীর মিক্সার মেশিনে পিষ্ট হয়ে দুই শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ তরছপাড়ায় মাষ্টারমাইন্ড অটো ব্রিকস সেন্টারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৭টায় মরদেহ হাসপাতালে আনলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।নিহত দুই শ্রমিক হলেন, উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ ঘুনিয়া এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. শাহিন (১৮) ও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ করাইয়াঘোনার রুহুল কাদেরের ছেলে কামরানুল ইসলাম জিহান (২০)।স্থানীয় লোকজন জানায়, সরকারী কোন দপ্তর থেকে অনুমতি না নিয়ে মিক্সার মেশিনের হলো ব্লক তৈরীর কারখানাটি চালু করা হয় দুই বছর আগে। এই মেশিনে বালু ও সিমেন্ট মিশিয়ে ব্লক তৈরী করায় একদিকে ওই কারখানার শ্রমজীবিরা জীবনঝুঁকিতে থাকে, অপর দিকে ওই কারখানা থেকে মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধ পন্থায় আহরিত বালুর সাথে সিমেন্ট মিশিয়ে ব্লক তৈরীর সময় নিকটস্থ পাড়া মহল্লা ও মসজিদ মাদ্রাসা এলাকায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়ে।এর প্রেক্ষিতে কারখানাটি তৈরীর পরপরই স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোন দপ্তরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি।কারখানায় বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মিক্সার মেশিনটি বন্ধ করে দুই শ্রমিক মেশিনটি পরিস্কার করার সময় হঠাৎ মেশিনটি চালু হয়। এসময় মেশিনের ভিতরে আটকে পড়া শাহিন ও জিসান পিষ্ট হয়। কিন্তু অপর শ্রমিকরা তাদের দুই সহকর্মীকে পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৭টায় চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাদের চেহারা ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ায় চেনার উপায় ছিল না। শ্রমিকদের নিকটাত্মীয়রা নিহত দুই শ্রমিকের পরিচয় সনাক্ত করে। সনাক্তের সময় হাসপাতালে আত্মীয়দের আহাজারীতে কয়েকশত মানুষ জড়ো হয়। জিহানের বড় ভাই জাহেদুল ইসলাম ও বড় বোন তাসমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ভাই ভুলবশত নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মারা গেছে তদন্ত করতে হবে প্রশাসনকে। এসময় শাহিনের মা হাসপাতালে এসে ছেলে মৃত দেহ দেখেই চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ঘটনার ব্যাপারে মাস্টার মাইন্ড অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরীর মালিক মো. গিয়াস উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভুঁইয়া জানান, ঘটনাটি শুনেই হাসপাতালে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। ওই টিম প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট তৈরীর পর মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :