পরমাণু বিস্ফোরণে কী ঘটে 


প্রকাশের সময় : মে ১১, ২০২৫, ১০:০১ পূর্বাহ্ন / ৩৬
পরমাণু বিস্ফোরণে কী ঘটে 
নিউক্লিয়ার বোমা বিস্ফোরণের পর প্রথম ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই  বিস্ফোরণের কেন্দ্রে তাপমাত্রা এক থেকে কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়।
ফলে, আশেপাশের মানুষ ও জীবজন্তু তৎক্ষণাৎ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বাড়িঘর, গাছপালা, যানবাহন, যা কিছু দাহ্য সব জ্বলে ওঠে বা গলে যায়।
* শকওয়েভ (Shockwave):
প্রচণ্ড শব্দ ও চাপে কংক্রিটের বাড়ি পর্যন্ত ধসে পড়ে।
বিস্ফোরণস্থলের কাছাকাছি মানুষদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
* তেজস্ক্রিয়তা (Radiation)::
গামা রে এবং নিউট্রনের প্রবাহ তাৎক্ষণিকভাবে আশেপাশের সব জীবকে মরণব্যাধিতে আক্রান্ত করে।
Radiation sickness দেখা দেয়: বমি, রক্তপাত, শরীরের কোষ ধ্বংস, কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু।
* নিউক্লিয়ার ফায়ারবল ও মাশরুম ক্লাউড:
কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায় মাশরুম আকারে ধোঁয়া ও ধ্বংসাবশেষের স্তম্ভ সৃষ্টি হয়। দূর থেকে দেখা যায়—এক ভয়াল মেঘের পাহাড় উঠছে আকাশে।
* তেজস্ক্রিয়তা বিস্তার ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ :
Chernobyl ও Hiroshima–Nagasaki-এর মতো স্থানে দেখা গেছে, বহু বছর পরেও মানুষ ক্যান্সার, জন্মগত ত্রুটি ও অন্যান্য জটিল রোগে ভোগে।
তেজস্ক্রিয় ধূলিকণা বাতাসে ও মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে ফসল উৎপাদন বন্ধ, পানীয় জল দূষিত, ও পরিবেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
* নিউক্লিয়ার উইন্টার (Nuclear Winter):
অনেকগুলো নিউক্লিয়ার বোমা ব্যবহার হলে (যেমন বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্রে), বাতাসে ধোঁয়ার স্তর এত বেশি হবে যে সূর্যালোক পৃথিবীতে পৌঁছাবে না।
এর ফলে গ্লোবাল কুলিং, খাদ্য সংকট ও ব্যাপক মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।
 এলাকার মানবশূন্যতা
* চেরনোবিল (Chernobyl, 1986):
বিস্ফোরণের পর ৩০ কিলোমিটার এলাকা ‘এক্সক্লুশন জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০২৫ সালেও এই অঞ্চল মানবশূন্য– গাইডেড ট্যুর ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ।
প্রকৃতি ধীরে ধীরে ফিরলেও, মানব বসবাস কমপক্ষে ২০০-৩০০ বছর অনিরাপদ।
আধুনিক হাইড্রোজেন বোমা ব্যবহারে
যে এলাকা আঘাতপ্রাপ্ত হবে, তা ৫০০–১০০০ বছর পর্যন্ত মানব বসবাসের অযোগ্য হতে পারে।
মাটি, জল ও বায়ু এত বেশি দূষিত হবে যে সাধারণ কোনো প্রযুক্তিতে সহজে পরিশুদ্ধ করা যাবে না।
নিউক্লিয়ার বোমা একটি তাৎক্ষণিক ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যম হলেও, তার আসল ভয়াবহতা ধীরে ধীরে প্রকৃতি, মানবসভ্যতা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গ্রাস করে। এটি শুধু একটি অঞ্চল ধ্বংস করে না, বরং পুরো পৃথিবীর পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও খাদ্যশৃঙ্খলকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
মোঃআছাদুজ্জামান মিয়া
ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
ফোন নাম্বার ০১৩১৫২১৯৭১২
তারিখ ১০/৫/২০২৫ইং