সহকারী শিক্ষক কারাগারে…


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪, ২:৫৭ অপরাহ্ন / ১৮
সহকারী শিক্ষক কারাগারে…
ফয়সাল আলম সাগর,
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষককে জামিনে মুক্ত করতে  আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা স্বাক্ষী দেওয়ার অপরাধে আবু ছিদ্দিক নামের এক সহকারী শিক্ষককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল রোববার (২৯ ডিসেম্বর) একটি মামলার শুনানীকালে আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়েছেন ওই শিক্ষক। পরে অন্য স্বাক্ষীর কাছ থেকে মিথ্যা স্বাক্ষী দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট  আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আনোয়ারুল কবির। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবু ছালেহ। 
কারাগারে পাঠানো শিক্ষক আবু ছিদ্দিক চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত কামাল হোসোইনের ছেলে এবং তিনি বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক। 
এডভোকেট আবু ছালেহ বলেন, বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউসি) কতৃক বরখাস্ত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহীন মুরাদ বাদি হয়ে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা রুজু করেন। পরে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য কক্সবাজারের সিআইডি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। সেসময় সিআইডি পুলিশের কাছে প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার কতৃক অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়টি সত্য বলে সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক সহ তিনজন স্বাক্ষ্য দেন। পরে সিআইডি পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। 
বাদির আইনজীবী এডভোকেট আবু ছালেহ বলেন, মামলা আদালতে চলমান থাকাবস্থায় প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার উচ্চ আদালত (হাইকোর্ট) থেকে জামিন নেন। অবশ্য উচ্চ আদালত সেসময় আদেশে তাঁকে নির্ধারিত সময়ে নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পনের জন্য নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবির মাধ্যমে  জামিনের আবেদন করেন সাবেক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার। মামলার শুনানি শেষে আদালত প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এডভোকেট আবু ছালেহ আরও বলেন, গতকাল রোববার (২৯ ডিসেম্বর) প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। এসময় আদালত সিআইডি পুলিশের কাছে স্বাক্ষ্য দেওয়া সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক ও অপর স্বাক্ষী মাহফুজুল করিমের কাছে তদন্তে স্বাক্ষ্য দেয়ার বিষয়ে জানতে চান। এসময় স্বাক্ষী মাহফুজুল করিম সিআইডি পুলিশের কাছে দেওয়া স্বাক্ষ্যের বিষয়ে স্বীকার করলেও অপর স্বাক্ষী সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিক প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের পক্ষাবলম্বন করে সিআইডি পুলিশের কাছে তিনি স্বাক্ষী দেননি বলে আদালতের মিথ্যা তথ্য দেন। 
এ অবস্থায় আদালত সংক্ষুব্ধ হন। এরই প্রেক্ষিতে  চকরিয়া চৌকি আদালতের বেঞ্চ সহকারী লুৎফুর রহমান বাদি হয়ে গতকাল রোববার দুপুরে একই আদালতে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিকের বিরুদ্ধে একটি স্বপ্রনোদিত মামলা রুজু করেন। ওই মামলায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আনোয়ারুল কবির আদালতে দাঁড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অপরাধে সহকারী শিক্ষক আবু ছিদ্দিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।