প্রকৌশলীর স্বাক্ষর জাল করে ঢাকা ওয়াসা আবারও বিনা অনুমতিতে সড়ক খোড়াখুড়ির অভিযোগ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর আগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর এলাকায় যাত্রাবাড়ী সড়ক খননে একই ঘটনা ঘটেছিলো। পরে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ডিএসসিসি’কে চিঠি লিখে দুঃখ প্রকাশ। একইভাবে গত সোমবার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ঢাকা ওয়াসা বিনা অনুমতিতে সড়ক খনন করছে বলে অভিযোগ করেছেন ডিএসসিসি’র মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি বলেন, ‘স্বাক্ষর জাল করে বিনা অনুমতিতে ওয়াসার সড়ক খননের ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সোমবার ওয়াসা ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভুয়া কাগজ দেখিয়ে বিনা অনুমতিতে সড়ক খনন করেছে। একটি সংস্থা কিভাবে আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া কাগজ সৃষ্টির মাধ্যমে এ ধরনের কাজ করে? এটি খুবই ন্যাক্কারজনক, দুঃখজনক। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ও অনাকাঙ্খিত কাজে যদি কোন সংস্থা লিপ্ত হয় তাহলে সমন্বয়ের কোন সুযোগ থাকে না।’
মঙ্গলবার আজিমপুরে ‘আজিমপুর আধুনিক নগর মার্কেটের শুভ উদ্বোধন এবং দোকানের চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র ও চাবি হস্তান্তর’ অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সোলাইমান সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নিলুফার রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় ডিএসসিসি’র মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে যাত্রাবাড়ী সড়ক খননের জন্য ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে চিঠি লিখে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং জানিয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং লালবাগের ঘটনায়ও ওয়াসা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে (প্রতিষ্ঠানকে) কালো তালিকাভুক্ত করবে বলে আমি আশা করি। এছাড়াও এ বিষয়টি আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে অবগত করব। আমরা আশা করব, মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
অনুষ্ঠানে মার্কেট নির্মাণ বিষয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এই মার্কেটটি তুলা মার্কেট নামে পরিচিত ছিল। এখানে মাত্র ১৫ জন দোকানি জরাজীর্ণ অবস্থায় কোনরকমে তাদের দোকানের কার্যক্রম চালিয়ে যেত। করোনার মাঝেই ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে এই মার্কেট নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তখন অনেকেই শঙ্কিত ছিল। কারণ, ঢাকা সিটি করপোরেশনের অতীতের ইতিহাসে দেখা যায় যে, ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিগ্রস্তই থেকে গেছে। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। এক মেয়র গিয়ে আরেক মেয়র আসে। ১৩, ১৫ ও ১৮ বছর হয়ে গেলেও মার্কেট নির্মাণ শেষ হতো না।
ডিএসসিসি’র মেয়র বলেন, ‘আমরা মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম নির্ধারিত সময়ের মাঝেই নির্মাণ সম্পন্ন করব। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। অত্যন্ত সুন্দর নান্দনিক এই নগর মার্কেট শুধু ক্ষতিগ্রস্তরাই না, আমরা ১১৭ জনের রুটি রুজির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মাঝে নির্মাণ সম্পন্ন করে তা যথাযথভাবে হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সুশাসন নিশ্চিতে ইতিহাস রচনা করেছে। ঢাকাবাসীর আস্থা অর্জনেও ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।’’
আপনার মতামত লিখুন :